নির্দেশনার ৮টি মূলনীতি
নির্দেশনার ৮টি মূলনীতিঃ
ভূমিকাঃ
নির্দেশনা হলো পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট কাজ। আর এরূপ বাস্তবায়নের কাজটি নিঃসন্দেহে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ব্যবস্থাপনা বিশারদগণের অনেকেই নির্দেশনা কার্যকে কিভাবে অধিক ফলপ্রদ করা যায় এজন্য মূলনীতি নির্ধারণের প্রয়াস পেয়েছেন। নির্দেশনার ৮টি মূলনীতিসমূহ নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
১/ উদ্দেশ্যসমূহের ঐক্যেরনীতিঃ
নির্দেশনার উদ্দেশ্য হলো কাঙ্খিত উপায়ে কার্য সম্পাদনের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্য অর্জন নিশ্চিত করা।S.K. kapur বলেছেন, “নির্দেশনা হলো অধস্তনদের প্রত্যাশিত গতিতে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করা যাতে প্রতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্য অর্জন করা যায়। “২০বিভিন্ন বিভাগ ও উপবিভাগের উদ্দেশ্যের মধ্যে ঐক্য থাকলেই প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়।
২/আদেশের ঐক্যের নীতিঃ
কোনো একজন কর্মীর একক ঊর্ধ্বতনের কাছে থেকে নির্দেশ পাওয়ার ওপরও নির্দেশনার সাফল্য নির্ভরশীল। অন্যতায় দ্বৈত অধীনতা এর সৃষ্টি হয় এবং কর্মীর পক্ষে দক্ষতার সাথে কার্য সম্পাদন অসম্ভব হয়ে পড়ে। সংগঠন কাঠামোতে এরূপ ব্যবস্থা নির্দিষ্ট করা গেলে নির্দেশনা দানে ইতিবাচক ফল লাভ করা সম্ভব হয়।
৩/ উদ্দেশ্য অবহিতকরণের নীতিঃ
নির্দেশনায় সফলতা অর্জনে উদ্দেশ্য অবহিতকরণের নীতি অনুসরণ করতে হয়। এরূপ নীতির মূলকথা হলো অধস্তনদেরকে নির্দেশনার উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবগত করা উচিত। যাতে তারা নিজেদের ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যের সঙ্গে তা মিলাতে পারে এবং স্বেচ্ছা প্রণোদিত হয়ে কাজ করতে পারে। এজন্যই শিক্ষাদানকে একটি নির্দেশনা কৌশল হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।
৪/ সুস্পষ্ঠতার নীতিঃ
কাউকে কিছু করতে বললে তা সুস্পষ্ঠভাবে বলা উচিত। যাতে সে বা তারা তা বুঝে সেভাবে কাজটি সম্পাদন করতে পারে। নির্দেশনার ক্ষেত্রে একেই সুস্পষ্টতার নীতি বলা হয়।S.K Kapur বলেছপন, ” নির্দেশনা হলো আদেশ প্রদান এবং সুস্পষ্ঠভাবে অধস্তনদের বলে দেওয়া যে তারা কি কাজ করবে এবং কিভাবে তা সম্পাদন করবে।
৫/সংক্ষিপ্ততার নীতিঃ
নির্দেশনা দানকালে ঊর্ধ্বতনকে সংক্ষিপ্ততার নীতি অনুসরণ করা উচিত। সংক্ষিপ্ততা বলতে গুছিয়ে সহজভাবে অল্প কথায় বক্তব্যের উপস্থাপনকে বুঝায়। আদেশ বা নির্দেশ যদি রচনমূলক হয় উপদেশ বক্তব্য বা ব্যাখ্যাদান যদি ভাষণ হয় তবে তার মধ্যে থেকে অধস্তনদের মূল কথাটি উপলব্ধি করতে সমস্যা হয় অযথা সময় ব্যয় হয় এবং ঊর্ধ্বতনের ইমেজও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
৬/প্রত্যক্ষ তদারকের নীতিঃ
তত্ত্বাবধান নির্দেশনা প্রক্রিয়ায় একটি অন্যতম উপাদান। এরূপ তত্ত্বাবধানে নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপকদের উল্লেখযোগ্য সময় ব্যহিত হয়।এরূপ তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপক ও কর্মীদের মধ্যে দূরত্ব যত কম থাকে, সম্পর্ক অবস্থান যত কাছাকাছি হয় তত্ত্বাবধানের ফলাফল ও তত বৃদ্ধি পায়। এজন্য ঊর্ধ্বতনের উচিত অধস্তনদের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগ বা সম্পর্ক রক্ষা করা।
৭/ অনুসরণের নীতিঃ
অধস্তনদের নির্দেশ দিলেই কাজ হয় না। নির্দেশ অধস্তনরা যথাযথভাবে পালন করেছে কিনা এক্ষেত্রে তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা তা যথার্থভাবে অনুসরণের ও প্রয়োজন পড়ে। সেজন্যই এক্ষেত্রে ব্যবস্থাপকদের অনুসরণের নীতি মেনে চলতে হয়। এর মূলকথা হলো নির্দেশ পালনে কর্মীদের কি সমস্যা হচ্ছে বা তারা নিজেরাই কোন সমস্যার কারণ হচ্ছে কিনা তা দেখে প্রয়োজনীয় কর্ম ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৮/নমনীয়তার নীতিঃ
নির্দেশনার ক্ষেত্রে একজন উর্ধ্বতনকে নমনীয়তার নীতি ও মেনে চলতে হয়।এরূপ নীতি বলতে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলাকে বুঝায়। অধস্তনদের নিকট থেকে যথাযথভাবে কাজ আদায়ের সক্ষম হন। ঊর্ধ্বতন যদি অনমনীয় মনোভাব গ্রহণ করেন তবে সেক্ষেত্রে অধস্তনদের বিগড়িয়ে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে।
যোগাযোগ : Faysal’s Education Counsel