৮টি প্রতিবন্ধকতা কর্মীদের প্রেষণাদানের ক্ষেত্রে:

কর্মীদের কাজের প্রতি উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে প্রেষণার গুরুত্ব সর্বজন স্বীকৃত হলেও প্রেষণা দানের বিষয়টি বেশ জটিল। একটি প্রতিষ্ঠানে প্রেষণা প্রদানের ক্ষেত্রে কোন কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে তা নির্ধারণ যেমনি  জটিল তেমনি ভাবে প্রেষণা দানের ক্ষেত্রে নানারূপ সমস্যা ও দেখা দেয়। নিম্নে ৮টি উল্লেখযোগ্য প্রতিবন্ধকতা সমূহ উল্লেখ করা হলোঃ

১.কর্মীদের প্রয়োজনের ভিন্নতাঃ

প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মীদের অভাব বা প্রয়োজনে একই ধরনের নয়। কেউ বা আর্থিক দিকে বেশি সুবিধা পেতে চায় কেউ বা অনার্থিক প্রেশণার দ্বারা অধিক উদুদ্ব হয়। তাই প্রেষণা দানের সর্বজন গ্রাহ্য পদ্ধতি ব্যবহার করা যায় না। এজন্য অবস্থা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সবাইকে কমবেশি প্রণোদিত করে এমন পদ্ধতি ব্যবহার করা প্রয়োজন।

২.কর্মীদের মানসিক অবস্থার ভিন্নতাঃ

কর্মীদের মনের বিচিত্রতা প্রেষণা দানের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে। তদুপরি কর্মীদের মানসিক অবস্থা অনেক সময়ই পরিবর্তিত হয়। ফলে প্রেষণা দানের একই ধরনের পদ্ধতি সবসময় কার্যকর হয় না।

৩.স্তর গত পার্থক্যঃ

প্রতিষ্ঠানের স্তরভেদে কর্মীদের মান মর্যাদা ও চাওয়া পাওয়ার ক্ষেত্রে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। নিচের স্তরের শ্রমিকরা ন্যায্য বেতনে বেশি উদ্বুদ্ধ  হলেও উচ্চস্তরের নির্বাহীরা অধিক কর্তৃত্বও  ক্ষমতা পেতে চায়। সুতরাং এটাও প্রেষণা দানের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করে।

৪.প্রবণতার পার্থক্যঃ

প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত বা প্রতিষ্ঠানের একই স্তরে নিয়োজিত সকল কর্মীর প্রবণতা এক নয়। নিয়োজিত  কার্যকে একজন  কর্মী যেভাবে গ্রগণ করে অন্যজন তাকে সেভাবে গ্রহণ নাও করতে পারে।কেইবা নিজের কাজের ব্যাপারে হতাশা ব্যক্ত করে। তাই সেক্ষেত্রে  প্রেষণাদান কষ্ঠসাধ্য হয় দাঁড়ায়।

৫.ধ্যান–ধারণার ভিন্নতাঃ

প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্তরের কর্মীদের ধ্যান-ধারণার ভিন্নতাও অনেক ক্ষেত্রে প্রেষণা দানে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। কর্মীদের প্রেষণা দানের ব্যাপারে ব্যবস্থাপনা অনেক সময় এ জন্য ও নিরুৎসাহিত হয় যে তাদের সুবিধা প্রদান বাড়তি সুবিধার গ্রহণ সৃষ্টি করবে। অন্যপক্ষে কর্মীরা তাদের দেয় সুবিধাকে  অপর্যাপ্ত মনে করে,যাও এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

৬.দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিন্নতাঃ

প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্তরে নিয়োজিত কর্মীদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা এক নয়। ফলে তাদের চিন্তার ক্ষেত্রে ও  ভিন্নতা দেখা যায়।তাই প্রেষণা প্রদানের জটিলতা সৃষ্টি হয়। ৭.অবিচার  ও স্বজনপ্রীতিঃপ্রতিষ্ঠানের সকল কর্মীর প্রতী যদি ঊর্ধ্বতন সুবিচার না করে এবং স্বজনপ্রীতির আশ্রয় গ্রহণ করে তবে কর্মীদের মধ্যে ঊর্ধ্বতন ও  প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খারাপ ধারণার সৃষ্টি হয়। সে অবস্থায় প্রেষণা জটিল হয়ে পড়ে।

৭.শ্রমিক সংঘের আচরণঃ

শ্রমিক সংঘ যদি প্রেষণাদানের ক্ষেত্রে  সহায়ক না হয়ে বাধা হয়ে দাঁড়ায়  তবে সেক্ষেত্রে  কর্মীদের ইতিবাচক উৎসাহ প্রদান ও অনেক সময় সমস্যার  কারণ হয়। আমাদের দেশের শ্রমিক সংঘগুলোর কার্যক্রম অনেক ক্ষেত্রেই  কর্মীদের কাজের প্রতি যথাযথ উদ্বুদ্ধ  করে না বলে মনে করা হয়।

৮.নমনীয়তা বাধাঃ

প্রেষণাদানের ক্ষেত্রে  অনমনীয়তার বিষয়টি ও  একটি সমস্যা। কর্মীদের কোনো সুবিধা একবার প্রদান করা হলে তা আর কমানো যায় না।তাই ঊর্ধ্বতন গণ কোনো সুবিধাদানের ক্ষেত্রে  এ বিষয়ে যথেষ্ট  সাবধানতা ও কড়াকড়ি অবলম্বন  করে।যা প্রকারান্তরে প্রেষণা দানের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

উপসংহারঃ

বলা যায়, প্রেষণাদানের ক্ষেত্রে  ঊর্ধ্বতন  নির্বাহীদের উপরোক্ত  সমস্যাসমূহ বিবেচনা করা প্রয়োজন। অন্যথায় ‘হিতে বিপরীত’ হওয়ার সম্ভাবনা  থাকে। সুচিন্তিতভাবে সঠিক প্রেষণা পদ্ধতি  প্রয়োগ সম্ভব  হলেই শুধুমাত্র  কাঙ্ক্ষিত  ফলে লাভ করা যায়।

আরো জানুন : নির্দেশনার ৮টি মূলনীতি

লাইক এন্ড শেয়ার : Faysal’s Education Counsel

Use image: Image by Igor Ovsyannykov from Pixabay