অনাগ্রহতার কারণ-তরুন ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার

তরুন ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার অনাগ্রহতার কারণ:

 

অনাগ্রহতার কারণ- তরুন ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার

অনাগ্রহতার কারণ- তরুন ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার

ভূমিকা:

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। জনগোষ্ঠীর শিক্ষাকে অবহেলা করে একটি দেশ কখনো উন্নয়নের শিখরে আরোহণ করতে পারবে না। শিক্ষাই করে তোলতে পারে একটি জাতিকে সভ্য , সচেতন, উন্নত আর সৃজনশীল। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি যেখানে উন্নয়নের কথা ভাবতে পারছে না সেখানে আমাদের দেশে শিক্ষার প্রতি দেখানো হচ্ছে অবহেলা। এই অবহেলাটি কখনো আসছে  শিক্ষার্থীদের দিক থেকে আবার কখনো বা অভিভাবকের দিক থেকে। যা একটি দেশের জন্য খুবই খারাপ একটি দিক।

আসক্তি:

কথায় আছে সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাস। উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা বেশিরভাগ সময় বন্ধুদের আড্ডাবাজিতে মেতে উঠেছে। বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে তারা নানাধরনের খারাপ কাজে আসক্ত হয়ে পড়ছে। যেমন : বিভিন্ন ভিডিও গেইমসের প্রতি আসক্তি , ইন্টারনেটের প্রতি আসক্তি, আড্ডাবাজি , সিগারেট- মদের প্রতি আসক্তি, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা চাঁদাবাজিসহ আরও নানান অনাকাঙ্ক্ষিত কাজতো রয়েছে।

সম্পৃর্ক্ততা:

আমাদের দেশের উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা খুবই চঞ্চল মন-মানসিকতার হয়ে থাকে। বয়সের কারণে কিংবা বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে তারা নানাধরনের অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। এসব সম্পর্কের কারণে তারা মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা না করে বেশিরভাগ সময় ডিপ্রেশনে থাকে।

রাত জেগে কথা বলা কিংবা চ্যাট করা যেনো তাদের নিত্যদিনের জরুরী কাজ ।মেয়েদের ক্ষেত্রেতো এর প্রভাব আরও ভয়াবহ। এসব অনৈতিক সম্পর্কের কারণে মেয়েদের অভিভাবকরা তাদের পড়ালেখা বন্ধ করে বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক কুপ্রথার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

গেইম:

উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের গেইমসের প্রতি আসক্তি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা অনেক আগে থেকেই চিন্তিত । ফ্রি ফায়ার, পাবজি নামক ভিডিও গেইমসে কিশোর কিশোরীরা বেশিরভাগ সময় নষ্ট করছে। মোবাইলের সহজলভ্যতা সাথে ইন্টারনেট কানেকশন এসব গেইমসের প্রতি এতটাই আসক্ত করছে যে এসব গেমস খেলার টাকা না পেলে তরুণ-তরুণীরা আত্মহত্যার পথ পর্যন্ত বেছে নিচ্ছে ।

এসব গেইমসের কারণে তারা যে শুধু পড়াশুনার ক্ষতি করছে তা না , মোবাইলে বেশিরভাগ সময় কাটানোর কারণে তাদের মানসিক বিকাশে বাধা পাচ্ছে, চোখের ক্ষতি হচ্ছে, নানান রকমের শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

মোবাইল কিংবা কম্পিউটারের পর্দায় ছেলেমেয়েরা ভিডিও গেইমস নিয়ে এতটাই মগ্ন থাকে যে বাস্তব জীবন যাপন থেকে দূরে সরে গিয়ে তারা এক নেশায় নিজেদের মেতে রেখেছে। অনলাইন গেইমসে আসক্তির কারণে ছেলেমেয়েরা মাঠে গিয়ে খেলাধুলা করছে না যার কারণে তাদের সাংস্কৃতিক চর্চাটা হচ্ছে না।

আড্ডাবাজি:

তরুণ সমাজ শুধু যে গেইমস কিংবা মোবাইলে সময় কাটাচ্ছে তা না। তারা তাদের মূল্যবান সময় কাটাচ্ছে আড্ডাবাজিতে। আড্ডায় কখনো হয়তো পাশে হেটে যাওয়া কোনো মেয়েকে উত্ত্যক্ত করছে , কখনো বা নিজেরা নিজেদের অশ্রাব্য বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করছে কিংবা দলবেঁধে চাঁদাবাজি করছে।

অনিয়ামাবর্তিতা:

ছাত্রসমাজের সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হলো অনিয়মানুবর্তিতা। ছাত্র-ছাত্রীদের উচিত সবকাজে নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলা এবং সময়ের কাজ সময়ে করা। কিন্তু আমাদের দেশের উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা নিয়মনীতি মেনে চলতে রাজি না। তারা চায় সবকিছুতে স্বাধীনতা।

ছাত্রজীবনে যত বেশি নিজেদের নিয়মনীতির মধ্যে আবদ্ধ রাখা যায় , ভবিষ্যত জীবন তত বেশি সুন্দর এবং সুশৃঙ্খল হয়। আমাদের ছাত্রছাত্রীরা প্রতিদিন নিয়মমাফিক পড়াশুনা করে না। তাদের বেশিরভাগই পড়ে পরীক্ষার আগের রাতে যার ফলশ্রুতিতে তারা ভালো ফলাফল করতে পারে না।

উপসংহার:

একটি দেশের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তরুণ প্রজন্মের উপর । একটি সমাজ তখনই নিজেদের উন্নত জাতি হিসেবে দাবি করতে পারবে যখন তাদের জনগোষ্ঠী নিজেদের উত্তম গুণে গুণান্বিত করতে পারবে।আর নিজেদের উন্নত জাতিতে পরিণত করতে, বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটাতে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। আমাদের অভিভাবকদের উচিৎ ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার ব্যাপারে আরও সচেতন হওয়া।

নির্দিষ্ট সময়ের পরে মোবাইল ল্যাপটপ এসব ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে না দেওয়া। ছেলেমেয়েরা স্কুলে কেমন বন্ধু-বান্ধবের সাথে মেলামেশা করছে সেদিকে নজর রাখা এবং নিয়মানুবর্তিতা , সময়ানুবর্তিতা এসব গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করা।

আরো ভিজিট করুন: ৬টিপ’স – ইংরেজিতে দক্ষতা বাড়ানোর

ফেইসবুক পেইজ: Faysal’s Education Counsel